ইংরেজি ভাষা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে যে প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি ফেইস করি তা হলো — আমার ইংলিশ ফ্লুয়েন্সি খুবই খারাপ। কিভাবে এটাকে ডেভেলপ করব?
আমাদের ইংরেজি বলার বিপরীতে সবচেয়ে বড় বাঁধা হলো আমরা নিজেরাই। ‘ইংরেজি বলতে হবে’ ব্যস হাত-পা কাপাকাপি শুরু হয়ে যায়। আমরা কেমন পারফর্মেন্স মোডে ঢুকে যাই। অনেকটা এ রকম যে, আমাদের সবার সামনে অভিনয় করে দেখাতে হবে। আর বলতে বলতে ভাবতে থাকি —
সে আমার সম্বন্ধে কী ভাবছে আল্লাহই জানে!
হয়তো আমার ইংরেজি নিয়ে ভাবছে ও মনে মনে হাসছে!
ফ্রেন্ডরাই বা কী ভাবছে আমার ইংরেজি নিয়ে!
আরও কত কী!
আমি একটা মাল্টিন্যাশনাল অরগানাইজেশনে কাজ করতাম। সেখানে আমার অনেক ওভারসিজ কলিগ ছিল। নতুন কেবল জয়েন করি। বস ডেকে বলল, ইন্ডিয়া থেকে অমুকে তোমার সাথে পরিচিত হতে চাচ্ছে। এর আগে কখনোই কোনো ফরেনারের সাথে ইংরেজি বলি নাই। তো শুনেই হকচকিয়ে গেলাম। রীতিমতো কাপাকাপি শুরু হয়ে গেল। বস বুঝে যায়। ফোন অন রেখেই বলে, আরে কোলকাতার। ইংরেজি বলা লাগবে না। বাংলাতেই বলো। হাফ ছেড়ে বাচলাম। কিন্তু কতদিন আর।
একদিন মুম্বাইয়ের এক কলিগ আমাকে সরাসরি ফোন দিয়ে বসল। দ্যাট ওয়াজ আ সিরিয়াস স্ট্রাগল। এতটাই কনশাস হয়ে যাই যে, কথা বলি আর আটকে যাই। কোনো রকমে কথা শেষ করি। এরপর দেশে-বিদেশে অনেকের সাথে ইংরেজি বলতে হয়, কিন্তু সবসময়ই সেই ইনহিবিটিং সেল্ফ-কনশাস পারফর্মেন্স মোডে ঢুকে পড়তাম, আর চিন্তা করতাম, আমার ইংলিশ এত খারাপ কেন! সারা জীবন কী শিখলাম! কলিগরা কী ভাবছে!
তবে ইংরেজি বলতে বলতে কিছু প্রশ্ন নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে থাকি। ইংরেজি বলাটাই কি আমার লক্ষ্য না কি জব ডেলিভার করা? আর কলিগরা কি সত্যিই আমার ইংরেজি নিয়ে ভাবছে? সবাই এত ব্যস্ত, আমার ইংরেজির মতো পেটি ইস্যু নিয়ে ভাবার সময় কার আছে?
সত্যিই তাই। আপনার ইংরেজি কী রকম এ নিয়ে ভাবার সময় কারও হাতে নাই। আমরা কনভারসেশনে কেন যাই? সিম্পলি বলতে গেলে, কাজ হাসিলের জন্য। আমার কাজটা ভালোভাবে শেষ করার জন্য কিছু একটা দরকার যা আপনার কাছে আছে এবং আপনার সাথে কথা বলে আমার কাজটা সুসম্পন্ন করব। ব্যস এটাই আমার লক্ষ্য। আপনি কিভাবে কথা বলেন বা কতটুকু ইংরেজি পারেন এ নিয়ে ভাবার সময় আমার নাই। I’ve got a job and I want to get it done. I’m least bothered about your English.
সত্যি বলতে, প্রফেশনাল ফিল্ডে মানুষ এভাবেই চিন্তা করে। এই চিন্তাটা আস্তে আস্তে মাথার মধ্যে ঢুকাই এবং ঐ সেল্ফ-কনশাস মোডটাও আস্তে আস্তে কমে এলো। আপনাদেরকেও বলি, কখনোই ইংরেজি নিয়ে ইমেজ-কনশাস হবেন না। একটা জিনিস মনে রাখবেন, ‘আপনি ইংলিশে খুব ফ্লুয়েন্ট’ এই ইমেজ দিয়ে ডীপ কোনো ইমপ্যাক্ট তৈরি করতে পারবেন না। ইমপ্যাক্ট তৈরি করতে হলে আপনাকে কাজ করতে হবে। যেখানেই আপনি যান বা কাজ করেন, সব জায়গাতেই একটাই ল — Only actions bring results and only through actions you can create deep-seated impacts. তাই সিচুয়েশনে পড়ে গেলে খালি নিজেকে বলেন যে, আমাকে কাজটা ভালোভাবে শেষ করতে হবে ব্যস। ইংরেজি কোনো বিষয় না। সাইকোলজির ভাষায় এটাকে বলে ‘কগনিটিভ রিফ্রেইমিং’। আপনি যদি এভাবে কগনিটিভ রিফ্রেইমিং করেন আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, ইউর ইংলিশ ফ্লুয়েন্সি উইল বি ওয়ে ওয়ে বেটার।
রিসেন্টলি আমার ইংলিশ ক্লাসে ইংলিশ কনভার্সেশন চালু করি। আমি একটা টপিক ছুঁড়ে দেই এবং পার্টিসিপ্যান্টরা তার উপর ইংলিশে বলতে থাকে। তাদেরকে শুধু একটা কথাই বলি — আপনাদের হাতে একটা কাজ আছে। কাজটা হলো এই টপিকের উপর ইংলিশ কনভার্সেশন। কাজটাকে শেষ করতে হবে। কাজটা যখন করবেন, বাচ্চাদের মতো বিহেইভ করবেন। বাচ্চারা যেমন কোনোকিছুর তোয়াক্কা করে না, আপনারাও কোনোকিছুর তোয়াক্কা করবেন না। জাস্ট ইংলিশ বলতে থাকেন, যা মাথায় আসে তা-ই বলতে থাকেন। শুদ্ধ না ভুল, তা মাথাতেই নিবেন না। প্রথম প্রথম একটু কনশাস ছিল, কিন্তু আস্তে আস্তে দেখতে পাচ্ছি তারা এই সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও বের হয়ে আসছে। আমি নিশ্চিত, আরও কিছুদিন প্র্যাক্টিস করলে, তারা আরও সাবলিল হবে এবং তাদের ইংলিশও আরও ধারাল হবে।