রসুলুল্লাহ সা. জায়েদ ইবন সাবিতকে বলেন — তুমি হিব্রু শেখো।
জায়েদ ইবন সাবিত শেখা শুরু করে দিলেন এবং মোটামুটি ১৫ দিনে তিনি হিব্রু শিখে ফেলেন। এরপর রসুলল্লাহ সা. এর কাছে হিব্রু ভাষায় যে সব মেসেজ আসত সেগুলা তিনি পড়ে শোনাতেন এবং মেসেজের রিপ্লাই দিতেন।
আরেকবার রসুলুল্লাহ সা. জায়েদ ইবন সাবিতকে বললেন — তুমি সিরিয়াক শেখো।
ব্যস শেখার প্রসেস শুরু। ১৭ দিন পার হলো। তিনি সিরিয়াক শিখে হাজির এবং রসুলল্লাহ সা. কে সিরিয়াক মেসেজ পড়ে শোনাতেন এবং মেসেজের রিপ্লাই দিতেন।
এখানে কতদিনে জায়েদ আলাদা দুইটা ভাষা আয়ত্ব করেন তা গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ হলো কীভাবে করেন। তো কীভাবে করেন জায়েদ?
রসুলুল্লাহ সা. কি তাকে কোনো কোর্স ম্যাটেরিয়াল দিয়েছেন? না।
কোনো বই সাজেস্ট করেছেন? না।
কোনো টিচারের কাছে পাঠিয়েছেন? না।
শুধু বলেছেন হিব্রু ও সিরিয়াক শেখো। দ্যাটস ইট।
এরপর জায়েদ কী করলেন? ন্যাচারের সাথে যায় এ রকম একটা মেথড বেছে নেন এনং ডুব দেন। এখানে কোনো কারিকুলাম নাই, নাই কোনো টাইমলাইন বা স্ট্রাকচার। তবে যে জিনিসগুলা খুব বেশি পরিমাণে ছিল তা হলো — সিচুয়েশন ও সিচুয়েশনাল ডিফিকাল্টি।
কী এই সিচুয়েশন এবং সিচুয়েশনাল ডিফিকাল্টি?
সহীহ বুখারীর ৭ নং হাদীস। বেশ লম্বাচওড়া একটা হাদীস। এই হাদীসটা বেশ কয়েকবার অ্যাটেমপ্ট নেই প্রতিটা শব্দ বুঝে বুঝে পড়ার। কিন্তু প্রথম ৫-৬ লাইন পার করতেই কঠিন লাগত, আর রেখে দিতাম বা অজুহাত দিতাম। আবার রাতে ধরব বা কাল ধরব। কিন্ত ধরা আর হইত না। পরে দেখলাম দুই বছরেও এই হাদীস শেষ করতে পারি নাই।
এই বছরের শুরুতে আরবি শেখানোর ব্যাচ শুরু করি। ডিসাইড করি ক্লাসে কাভার করব। আবারও যথারীতি বুঝার চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এবার আর অপশন নাই। বুঝতেই হবে। যখনই চ্যালেঞ্জ ফেইস করি ইন্টারনেট ঘাটি বা বিভিন্ন বই ঘাটি বা ডিকশনারি ঘাটি বা যে জানে তাকে জিজ্ঞেস করি। সামহাও সমাধান করে ফেলি।
এই যে হাদীসটা ক্লাসে শেখাবো — এর মানে হলো নিজেকে একটা সিচুয়েশনে ফেলে দিলাম। আর এটা ডিকোড করতে যা ফেইস করি তা হলো সিচুয়েশনাল ডিফিকাল্টি। আপনি যা কিছুই শিখতে চান এই সিচুয়েশন ও সিচুয়েশনাল ডিফিকাল্টি থাকতেই হবে। এ ছাড়া আপনি কিছুই শিখতে পারবেন না। ইংরেজিতে একটা কথা আছে
— A rough sea makes a good sailor. সুতরাং সিচুয়েশন ও সিচুয়েশনাল ডিফিকাল্টি আ মাস্ট।